আগামী বছরের জুলাইয়ের মধ্যেই ৫০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়ার আশা প্রকাশ করেছে ভারত। দেশের ২৫ কোটি মানুষের জন্য ভ্যাকসিন সহজলভ্য করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। রোববার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন।
বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই তালিকায় ভারতের অবস্থান দ্বিতীয়। দেশটিতে প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ।
দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৫ হাজার ৮২৯। ফলে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৫ লাখ ৫০ হাজারের বেশি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১ লাখ ১ হাজার ৭৮২ জন।
এক টুইট বার্তায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধণ জানিয়েছেন, ২০২১ সালের জুলাইয়ের মধ্যেই ৪০ কোটি থেকে ৫০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন হাতে পাওয়া এবং ব্যবহারের লক্ষ্য রয়েছে আমাদের।
ভ্যাকসিন পাওয়া এবং তা সুষম বন্টনের জন্য বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কাজ করছে ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউট এবং বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
এদিকে, রোববার সামাজিক মাধ্যমে সাধারণ মানুষের প্রশ্নের জবাবে ডক্টর হর্ষ বর্ধন বলেন, সরকার দিন-রাত কাজ করছে যেন ভ্যাকসিন চলে এলে সুষ্ঠু ও সমানভাবে সবার মধ্যে তা বন্টন করা যায়। অক্টোবরের মধ্যেই তালিকা তৈরি হয়ে যাবে যে কারা আগে ভ্যাকসিন পাবে।
যে বয়সের মানুষদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে তার তালিকাও তৈরি হচ্ছে। এজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সব রাজ্যের সরকারকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই মুহূর্তে একটি ফরম্যাট তৈরি করছে যেখানে রাজ্যগুলো অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে জনসংখ্যার তালিকা জমা দিতে পারে।
ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে কারা অগ্রাধিকার পাবে তার একটা মোটামুটি রূপরেখাও দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, সাধারণত স্বাস্থ্যকর্মী, ৬৫ বছরের বেশি বয়স্ক মানুষ ও যাদের শারীরিক অবস্থা খারাপ তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া দেওয়া হবে। অবশ্য বিদেশ থেকে কোনও ভ্যাকসিন এলে আগে তা আইসিএমআর ভাল করে খতিয়ে দেখবে বলেও জানিয়েছেন ডা. হর্ষ বর্ধন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে আমরা হিসেব করে দেখেছি প্রথমে ৪০ থেকে ৫০ কোটি ডোজ অন্তত ২০ থেকে ২৫ কোটি মানুষের শরীরে দেওয়া হবে। ২০২১ সালের জুলাই মাসের মধ্যে এই কাজ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। অবশ্য এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল এখনও বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ভারতের যেসব কোম্পানি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চালাচ্ছে তাদের সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে কেন্দ্র। তবে এ বিষয়ে কোনও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি তিনি।
কোভিড ভ্যাকসিন চলে আসার পর যাতে কোনভাবেই কালোবাজারি না হয় সেজন্যও কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন হর্ষ বর্ধন। তিনি বলেন, সবকিছু পরিকল্পনা মাফিক হবে। ইতোমধ্যেই সেই কাজ শুরু হয়েছে। সবার মধ্যে যেন ভ্যাকসিন ঠিকভাবে পোঁছে দেওয়া যায় সেটা সরকারের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন তিনি।