বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সমাবেশে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে গাজীপুরের সফিপুরে তিনি সমাবেশে যোগ দেন। সেখানে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অভিবাদন গ্রহণ করেন।নানা আয়োজনে সফিপুরে আনসার ও ভিডিপি একাডেমিতে বাহিনীর ৪৪তম জাতীয় সমাবেশ হচ্ছে। উদযাপনে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
সমাবেশে উপস্থিত আছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম উদ্দিন, আনসার ও ভিডিপি একাডেমির কমান্ড্যান্ট মো. নূরুল হাসান ফরিদী, বাহিনীর উপমহাপরিচালক, অন্যান্য কর্মকর্তা ও আনসার- ভিডিপির সদস্যরা।এছাড়া আরও উপস্থিত আছেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, সংসদ সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনী প্রধান, সিনিয়র সচিবসহ বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানরা। অপরদিকে কূটনৈতিক ব্যক্তি, সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা আমন্ত্রিত হয়েছেন।
১৯৪৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি আনসার বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজধানী শহর থেকে সমতল ও পার্বত্যাঞ্চলসহ তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত এ বাহিনীর সদস্যরা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ বাহিনীর সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, জননিরাপত্তা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ২টি পূর্ণাঙ্গ নারী আনসার ব্যাটালিয়ন এবং বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নসহ (এজিবি) মোট ৪২টি ব্যাটালিয়ন রয়েছে।
পার্বত্যাঞ্চলে ১৬টি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা ‘অপারেশন উত্তরণ’ এ যৌথ ও একক ক্যাম্পে দেশের অখণ্ডতা রক্ষা, পাহাড়ি বাঙালি সম্প্রীতি রক্ষা এবং সন্ত্রাস দমনে দায়িত্ব পালন করছেন। এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এ যাবৎ বিভিন্ন সময় ১৯ জন সদস্য আত্মোৎসর্গ করেছেন।এছাড়া পার্বত্যাঞ্চলের হিল আনসার ও হিল ভিডিপি সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
সমতল এলাকায় আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা জাতীয় সংসদ সচিবালয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, রাষ্ট্রীয় তোষাখানাসহ সমতল এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ মোবাইল কোর্ট ও ভেজালবিরোধী অভিযান, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন, চোরাচালান রোধ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প, মেট্রোরেল, পায়রা বন্দর, বিমানবন্দর, প্রেষণে এসএসএফ, র্যাব, এনএসআই, ডিজিএফআই এ দায়িত্ব পালন করছে।
বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের (এজিবি) সদস্যরা কূটনৈতিক জোন ও বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছেন এবং বর্তমানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তায় কাজ করছেন।দেশের বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর, ইপিজেডসহ গুরুত্বপূর্ণ ৫ হাজারের অধিক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তায় প্রায় ৫৫ হাজার অঙ্গীভূত আনসার সদস্য নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন।এছাড়া বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব ঈদ, পূজা-পার্বনসহ বর্ষবরণ, শপিং মল, বাণিজ্য ও বইমেলা, রেল স্টেশন, ট্রাফিক কন্ট্রোলসহ প্রভৃতি ক্ষেত্রে সাধারণ আনসার সদস্য-সদস্যরা জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করেন।দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ব্যালট বাক্স, ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও ভোটারদের শৃংখলভাবে ভোটদান নিশ্চিত করতে ৫ লাখ ১৭ হাজার, ১৪৩ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করেন।