Homeফিচার সংবাদআমেরিকায় টি-২০ বিশ্বকাপ আয়োজনে বিপুল ক্ষতি আইসিসির!

আমেরিকায় টি-২০ বিশ্বকাপ আয়োজনে বিপুল ক্ষতি আইসিসির!

১২জুন ভারতের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাচ শেষ হওয়ার পরই ব্যাগ অ্যান্ড ব্যাগেজ গোছানোর মত নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামকেও প্যাক করা শুরু হয়। পুরো স্টেডিয়ামের গ্যালারির নাট-বল্টু খোলা শুরু হয়। এমনকি যে চারটি ড্রপ ইপ পিচ স্থাপন করা হয়েছিলো, সেগুলোও তুলে ফেলা হয়।ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামের বাইরে অপেক্ষা করতে থাকে বিশাল বিশাল ক্রেন। ম্যাচ শেষে দুই দল মাঠ ছাড়ার আগেই ক্রেনগুলো কাজ শুরু করে দেয় অস্থায়ীভাবে তৈরি করা কাঠামোগুলো খুলে ফেলার।নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অস্থায়ী কাঠামোগুলো খুলে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে লাস ভেগাসের ফর্মুলা ওয়ানে। আইসিসি যে সেখান থেকেই এসব অবকাঠামো একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ভাড়া করে এনেছিলো!

বিশ্বকাপে নিউইয়র্ক প্রজেক্ট ছিল আইসিসির ইতিহাসে সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী এবং সবচেয়ে খরুচে একটা প্রজেক্ট। মাত্র ১০৬ দিনে এই স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করা হয়। যেখানে ভারত-পাকিস্তানের মত বিশ্বকাপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিও অনুষ্ঠিত হয়েছিলো।পুরো বিশ্বকাপের মোট ৫৫টি ম্যাচের মধ্যে ১৬টিরই আয়োজক ছিল যুক্তরাষ্ট্র। আইসিসি তাদের বোর্ড মিটিংয়ে উপস্থাপনের জন্য বিশ্বকাপে হওয়া হিসাব তৈরি করেছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্রের অংশে বাজেটের চেয়ে অনেক বেশি খরচ করতে হয়েছে আইসিসিকে। ফলে বিপুল পরিমাণে আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হলো তাদের। এই বিপুল ক্ষতি কেন হলো, এখন সে কারণ খতিয়ে দেখবেন আইসিসি কর্মকর্তারা।

আগামী ১৯ জুলাই শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় হবে আইসিসির গভর্নিং কাউন্সিলের বার্ষিক সম্মেলন। সেখানেই অতিরিক্ত খরচ নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্বকাপের আয়-ব্যয়ের চূড়ান্ত হিসাব এখনও হয়নি। প্রাথমিকভাবে যে হিসাব তৈরি করা হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে শুধু খরচই বেশি হয়নি। লাভের পরিবর্তে ক্ষতি হয়েছে আইসিসির। মনে করা হচ্ছে, বিশ্বকাপের আমেরিকা পর্বে আইসিসির ক্ষতির পরিমাণ ২ লক্ষাধিক ডলার।আইসিসির এক বোর্ড ডিরেক্টর জানান, বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্রের অংশের জন্য ৪০-৫০মিলিয়ন ডলার। যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র অংশে বিশ্বকাপ পরিচালনা বাবদ ব্যায় ধরা হয়েছে ১৫ মিলিয়ন ডলার এবং অবকাঠামো নির্মাণের ব্যায় ধরা হয়েছে আরও প্রায় ৩০ মিলিয়ন ডলার।কিন্তু বিশ্বকাপ শুরুর আগেরদিন যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য আইসিসি যে কমিটি তৈরি করে দিয়েছিলো, তারা হঠাৎ করেই আরও ২০ মিলিয়ন ডলার দেয়ার অনুরোধ জানায়। যা আইসিসির বাজেটের চেয়ে অনেক বেশি।

বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে একাধিক অভিযোগ ওঠায় পদত্যাগ করেন প্রতিযোগিতার ডিরেক্টর ক্রিস টেটলি। ইংল্যান্ডের ক্রিকেট কর্মকর্তা অবশ্য প্রতিযোগিতা শুরুর আগেই বিশ্বকাপের আমেরিকা পর্বে আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন।আইসিসির এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘বোর্ডের অনেক সদস্যই টেটলির কাজে খুশি নন। টেটলি পদত্যাগ করলেও বিশ্বকাপে আমেরিকা পর্বের ক্ষতির দায় তিনি এড়াতে পারেন না। আমেরিকার আরও কিছু শহরে বিশ্বকাপের ম্যাচ আয়োজন করা যেত; কিন্তু যে কোনও কারণেই হোক টেটলি নিউইয়র্কের বাইরে ম্যাচ আয়োজন করতে ইচ্ছুক ছিলেন না। এমনকি বিশ্বকাপের ম্যাচ যে পিচগুলিতে হয়েছে, তাতে প্রতিযোগিতা শুরুর আগে প্রস্তুতি ম্যাচ আয়োজনেরও ব্যবস্থা করেননি।’এসব কিছু নিয়েই আলোচনা হবে ১৯ জুলাইয়ের বৈঠকে। আইসিসি কর্তাদের একাংশ মনে করছেন, টেটলির জন্য আমেরিকায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ করার উদ্দেশ্য সফল হয়নি। সে দেশের মানুষের সামনে ক্রিকেটকে আরও বেশি করে তুলে ধরা যেত। সে সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments