ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন দেশটির বর্ষীয়ান রাজনীতিক মিশেল বার্নিয়ের। আগাম নির্বাচনের প্রায় দুই মাস পর বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।১৯৫৮ সালে ফ্রান্সে নতুন প্রজাতন্ত্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পর থেকে সবচেয়ে প্রবীণ প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন বার্নিয়ের। তিন বছর আগে ম্যাক্রোঁকে সরিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট পদে বসতে চেয়েছিলেন তিনি। দেশে অভিবাসন সীমিত করা ও নিয়ন্ত্রণে আনার কথা তুলেছিলেন তিনি। তবে সেবার নিজ দল থেকেই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাননি বার্নিয়ের।ফ্রান্সের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়াল আতালের স্থলাভিষিক্ত হবেন তিনি। চলতি বছরের শুরুর দিকে আতালকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন ম্যাক্রোঁ। গত জুলাই থেকে ফ্রান্সের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
ডানপন্থি রিপাবলিকান (এলআর) দলের ৭৩ বছর বয়সী সদস্য বার্নিয়েরের রাজনৈতিক জীবন বেশ দীর্ঘ। ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) দুই জায়গাতেই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বার্নিয়ের ইইউয়ের ব্রেক্সিটবিষয়ক প্রধান আলোচক ছিলেন। তিনি ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনায় নেতৃত্ব দেন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে প্রধানমন্ত্রী বার্নিয়েরকে। এখন এমন একটি সরকারব্যবস্থা গঠন করতে হবে যেখানে তিনটি প্রধান রাজনৈতিক ভাগে বিভক্ত পার্লামেন্ট এগিয়ে যাবে। বিভক্তি এড়িয়ে টেকসই একটি সরকার গঠনের চ্যালেঞ্জের সামনে রয়েছেন তিনি।গত জুন ও জুলাইয়ে ফ্রান্সে আগাম জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে সরকার গঠনের জন্য কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে রাজনৈতিকভাবে বড় তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে পড়ে দেশটির পার্লামেন্ট। এখন এই বিভক্তি এড়িয়ে টেকসই একটি সরকার গঠনের চ্যালেঞ্জ হাতে নিতে হবে নতুন প্রধানমন্ত্রীকে।এদিকে, প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর পছন্দ ঘিরে এরই মধ্যে বামপন্থি রাজনৈতিক জোট নিউ পপুলার ফ্রন্টে (এনএফপি) অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত আগাম নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পায় তারা।
জোটের নেতাদের অভিযোগ, নির্বাচনে এনএফপি সবচেয়ে ভালো করলেও ডানপন্থি একজনকে প্রধানমন্ত্রী করা হলো। এতে দেশে একটি ডানপন্থি সরকার গঠন হতে চলেছে।