Homeআন্তর্জাতিক‘কামিকাজে ড্রোন’ কিনছে ভারত

‘কামিকাজে ড্রোন’ কিনছে ভারত

দূরপাল্লার শক্তিশালী ‘কামিকাজে ড্রোন’ কিনতে যাচ্ছে ভারত। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন দেশটির সেনাবাহিনীর আর্টিলারি বিভাগের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল অদোশ কুমার। তবে ঠিক কোন দেশের কাছ থেকে এই ড্রোন কেনা হচ্ছে, তা স্পষ্ট করে বলেনি কোনো ভারতীয় গণমাধ্যম।ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া’র প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সম্প্রতি ইউক্রেন যুদ্ধে কামিকাজে ড্রোনের কাছে নাস্তানাবুদ হয়েছে রুশ সেনাবাহিনী। তুরস্কের কাছ থেকে এই অত্যাধুনিক ড্রোন পেয়েছিল ইউক্রেন।সমর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপেক্ষাকৃত কম দামের কামিকাজে ড্রোনের কাছে ধরাশয়ী হয়েছে রাশিয়ার অত্যাধুনিক টি-৭২, টি-৯০ ট্যাংক বহর। ফলে যুদ্ধক্ষেত্রে ট্যাংকের উপযোগিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে ও কামিকাজে ড্রোনের একটা চাহিদা তৈরি হয়েছে।

ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার এমন পরিস্থিতি দেখে ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের যুদ্ধাস্ত্রনীতিতে পরিবর্তন আনছে। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার (ডিআরডিও) একটি সূত্র জানিয়েছে, কামিকাজে ড্রোন কেনার পাশাপাশি পিনাকা রকেটের পাল্লা বৃদ্ধির কাজও শুরু দিয়েছে ডিআরডিও।এমনিতে পিনাকা মার্ক-১ এর সর্বাধিক পাল্লা ৪০ কিলোমিটার ও পিনাকা মার্ক-২  এর সর্বাধিক পাল্লা ৯০ কিলোমিটার। ওই রকেটের পাল্লা আরও বাড়িয়ে ৩০০ কিলোমিটার করা হচ্ছে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল অদোশ কুমার বলেন, দূরপাল্লার ‘নির্ভয়’ এবং ‘প্রলয়’ ক্ষেপণাস্ত্রও সেনায় অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে নির্ভয় এবং প্রলয়কে সেনায় অন্তর্ভুক্তির অনুমোদন দিয়েছে ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কাউন্সিল।টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্ভয় ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ২০০০ কিলোমিটার এবং প্রলয় ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ৪০০ কিলোমিটার।এ ছাড়াও শব্দের চেয়ে দ্রুত গতির ক্ষেপণাস্ত্র নিয়েও কাজ শুরু করেছে ডিআরডিও। গোটা বিষয়টিকে ‘আত্মনির্ভর’ ভারতের সাফল্য হিসেবে দেখছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।কামিকাজে শব্দটির উৎপত্তি হলো জাপানে। অর্থ আত্মঘাতী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানিরা কৌশল হিসেবে এটি ব্যবহার করত। কৌশল হলো শত্রুর লক্ষ্যবস্তুতে বিমানসহ আত্মঘাতী হামলা করা, যেন শত্রুপক্ষের সর্বোচ্চ ক্ষতিটা হয়।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানি বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ শাখাকে বলা হতো ‘কামিকাজে স্পেশাল অ্যাটাক ইউনিট’। ইরানের শহীদ-১৩৬ ড্রোনগুলো হলো আত্মঘাতী ড্রোন। লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করার জন্য এগুলো এগিয়ে। কিন্তু ড্রোন থেকে কোনো কিছু ছোড়া হয় না।

ড্রোনটিই গিয়ে সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে এবং ধ্বংস হয়ে যায়। এ কারণে এগুলো কামিকাজে বা আত্মঘাতী ড্রোন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।ইরানের তৈরি শহীদ-১৩৬ ড্রোন যুদ্ধক্ষেত্রে প্রথম দেখা যায় সেপ্টেম্বরে। এগুলোকে ছোট ক্রুজ মিসাইল হিসেবে দেখা হয়। একসময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, রাশিয়া এ রকম ২ হাজার ৪০০টি ড্রোন কিনেছে, যদিও এগুলো দ্রুত কমে আসছে।আল-জাজিরার প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অ্যালেক্স গ্যাটোপোলোস বলেন, লক্ষ্য শনাক্ত করার আগে এ অস্ত্রগুলো নির্দিষ্ট অঞ্চলের ওপরে ঘোরাফেরা করতে পারে। এরপর লক্ষ্যে হামলে পড়ে।’ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের মতো এগুলো শত শত কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। তবে ক্রুজ ব্যয়বহুল। গ্যাটোপোলোস বলেন, কামিকাজে ড্রোন সস্তা কিন্তু চমৎকার বিকল্প।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments