রাষ্ট্র সংস্কার উদ্যোগের অংশ হিসেবে আরও চারটি কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।পরে সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এ তথ্য জানান।নতুন চারটি কমিশন হলো- স্বাস্থ্য কমিশন, গণমাধ্যম কমিশন, নারীবিষয়ক কমিশন ও শ্রমিক অধিকার কমিশন।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদ। নারীবিষয়ক কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা ও মানবাধিকারকর্মী শিরীন পারভিন হক ও শ্রমিক অধিকার সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতানউদ্দিন আহমেদ।রিজওয়ানা হাসান বলেন, এই চার কমিশন গঠনের কাজ প্রায় চূড়ান্ত। আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে কমিশন চারটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে।
শিক্ষা খাতে কোনো কমিশন গঠন করা হচ্ছে– কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়ে সরকারের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। শিক্ষা সংস্কার কোন পথে গেলে আধুনিক ও যুগোপযোগী এবং বতর্মান প্রজন্মের চাহিদাকে প্রতিফলন করে এমন সব বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গণমাধ্যমকে জানানো হবে।
তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে কমিশনের কাজ সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হচ্ছে না। প্রত্যেক কমিশনপ্রধানকে বলা হয়েছে তিনি তার কর্মপরিধি ঠিক করবেন। সরকারের পক্ষ থেকে বড় পরিসরে একটা ধারণা দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের কর্মপরিধি এবং সংস্কারের ক্ষেত্র কী হবে সেটা উনারা ঠিক করবেন।রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি সংক্রান্ত কাজের প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। সেই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সিদ্ধান্ত কী হয়, পরবর্তীতে সেটি জানানো হবে।
এর আগে রাষ্ট্র সংস্কারে আরও ৬টি কমিশন গঠিত হয়। এর মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ গেজেট প্রকাশ করে সরকার। আর ৬ অক্টোবর সংবিধান সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ গেজেট প্রকাশিত হয়। এসব কমিশন ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে।সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সরকারী মাহফুজ আলম ও প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।এর আগে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ গেজেট প্রকাশ করে সরকার। আর গত ৬ অক্টোবর সংবিধান সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ গেজেট প্রকাশিত হয়।নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ হিসেবে কমিশনের প্রধান করা হয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারকে। সদস্যদের মধ্যে স্থানীয় সরকার ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ হিসেবে শিক্ষাবিদ ড. তোফায়েল আহমেদ, ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র বিশেষজ্ঞ হিসেবে নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচন ব্যবস্থার সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলী, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ হিসেবে ড. মো. আব্দুল আলীম, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও ওপিনিয়ন মেকার হিসেবে ডা. জাহেদ উর রহমান রয়েছেন।