ক্ষমতার শেষপ্রান্তে এসে মধ্যপ্রাচ্যে মিত্র দেশগুলোকে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রে সাজাতে উঠেপড়ে লেগেছে ট্রাম্প প্রশাসন। কিছুদিন আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে রেকর্ড পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র বিক্রির অনুমোদনের পর এবার সৌদি আরব, মিসর, কুয়েতের কাছে বিপুল গোলাবারুদ ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম পাঠাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
মঙ্গলবার সৌদি আরবের কাছে বিপুল পরিমাণ অত্যাধুনিক বোমা বিক্রির অনুমোদনের ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের প্রতিরক্ষা সুরক্ষা সহযোগিতা সংস্থা। একই সঙ্গে কুয়েতের কাছে চার বিলিয়ন ডলারের এইচ-৬৪ই অ্যাপাচে হেলিকপ্টার, মিসরের কাছে ১০৪ মিলিয়ন ডলারের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও যুদ্ধবিমানের জন্য ৬৫ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলারের নির্ভুল লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণী যন্ত্রাংশ বিক্রির অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে।
সমালোচকদের দাবি, কংগ্রেসনাল বোর্ড এবং জনগণের বিরোধিতা সত্ত্বেও ট্রাম্প প্রশাসন আগামী ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা ছাড়ার আগেই সৌদি ও আমিরাতের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী দেশের কাছে তাড়াহুড়ো করে সমরাস্ত্র পাঠানোর চেষ্টা করছে।
সাংবাদিক জামাল খাশোগি প্রতিষ্ঠিত সংস্থা ডেমোক্র্যাসি ফর আরব ওয়ার্ল্ড নাউ (ডন)-এর নির্বাহী পরিচালক সারাহ লিয়া হুইটসন বলেন, মানবাধিকার বিষয়ে সৌদি আরবের নিকৃষ্ট রেকর্ড সত্ত্বেও তাদের অস্ত্র উপহার দিতে ছুটছে ট্রাম্প প্রশাসন।
সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসির অস্ত্র ও নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিচালক উইলিয়াম হার্টাং বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যে অস্ত্র বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ইয়েমেনে নির্বিচারে বিমান হামলা চালিয়ে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ হত্যার ইতিহাসের ভিত্তিতে সৌদি আরবের কাছে আর বোমা বিক্রি করা উচিত নয়। এটা কংগ্রেস যদি আটকাতে না পারে, তাহলে বাইডেন প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর সেটি করা উচিত।
তবে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ বলছে, এসব অস্ত্র বিক্রি যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতি এবং জাতীয় নিরাপত্তার শর্তগুলোকে সমর্থন করছে, যা বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে ২৩ বিলিয়ন ডলারের সমরাস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসনের অজুহাত, ইরানের ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবিলায় এর দরকার রয়েছে।
এদিকে, সৌদির নেতৃত্বে ইয়েমেন যুদ্ধে সরাসরি অংশ নেওয়া আমিরাতের কাছে নতুন করে অস্ত্র সরবরাহ আটকাতে বুধবার একটি মামলা হওয়ার কথা যুক্তরাষ্ট্রে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে মামলাটি করবে নিউইয়র্ক সেন্টার ফর ফরেন পলিসি অ্যাফেয়ার্স। এক্ষেত্রে, আমিরাতের কাছে ড্রোন ও এফ৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রিতে তাড়াহুড়োর মাধ্যমে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আইনকে উপেক্ষা করা হয়েছে বলে অভিযোগ আনা হতে পারে।